Saturday, May 7, 2022

শ্রী চাষ পদ্ধতি

শ্রী দেবকান্ত দাস দ্বারা অনুপ্রাণিত এবং রচিত



রাসায়নিক সার দিয়ে চাষ করা ছেড়ে জৈব সার ব্যবহার করে চাষ করব কেন?


 বর্তমান যুগের চাষিরা জৈব সার দিয়ে চাষ করলে তার সঠিক পদ্ধতি না জানার ফলে উৎপাদন কম হয়। তাই জৈব চাষ ছেড়ে দিয়ে রাসায়নিক সারের প্রয়োগ বেশি করে ফেলে। ফলে জমিতে ধানের ফলন বেশি হলেও মাটির অম্লতা বৃদ্ধির ফলে বাকি ফসল গুলিতে তেমন উৎপাদন হয় না। তাই আমরা জৈব সার দিয়ে চাষ করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। যদি জৈব সার দিয়ে চাষ করার সঠিক পদ্ধতি জানতে পারা যায় তাহলে ধান ছাড়া বাকী ফসল গুলি ভালোভাবে পালন করা সম্ভব হবে। এতে আমাদের খরচ কমবে আয় বৃদ্ধি পাবে, সাথে সাথে আমরা বিষমুক্ত খাবার খেয়ে সুস্থভাবে বাঁচতে পারব।


রাসায়নিক সার দিয়ে ফলন বাড়ানোর চেষ্টা করা হলে তা মাটির উর্বরতা শক্তি কে ক্ষতি করে এর ফলে রাসায়নিক সার প্রতিবছরে প্রয়োগের পরিমাণ থেকে থেকে বাড়াতে হয়, এতে খরচ বাড়ে কিন্তু উৎপাদন একই থাকে। ফলে দিনে দিনে চাষিদের আয়েরপরিমাণ আরো কমতে থাকে, এখন রাসায়নিক সারের দাম এর পরিমান সরকার আরো বৃদ্ধি করেছে সুতরাং খরচ আরো বেড়েছে।


শ্রী পদ্ধতিতে ধান চাষ করার নিয়মাবলী


বীজ শুদ্ধিকরণ:-


জৈবিকভাবে ধান শুদ্ধিকরণের নিয়ম হচ্ছে একটা বড় জলের জায়গা নিতে হবে তাতে জল ও লবণের মিশ্রণ করতে হবে যতক্ষণ না জলটি সমুদ্রের জলের মতো না হয়ে যায় এছাড়াও দেখে নেবেন যেন ওই মিশ্রণে একটি ডিম ফেলে দিলে যেন ভাসে।


এরপর ধানের বীজ গুলিকে ওই মিশ্রণে ফেলতে হবে, যেগুলি ডুবে যাবে সেই ধানের বীজ গুলিকে তুলে সাদা জল দিয়ে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে যাতে ধানের গায়ে যেন কোন রকমের লবণ না থাকে, তোলার পর ধান গুলিকে জলে 24 থেকে 48 ঘণ্টা ভেজাতে হবে পরে জল থেকে ধান গুলো থেকে তুলে নিতে হবে।


বীজতলা তৈরি:-


বীজতলা টি এমনভাবে তৈরী করবেন যেন পুরোটা সমতল হয় এছাড়াও যেন কাদা কাদা হয়ে যায় তারপর সেই ফলানো 20k এমনভাবে সেই বীজতলায় হালকা হালকা করে ছিটিয়ে দিতে হবে এক সপ্তাহ পর কিছুটা পরিমাণ কেঁচো সার ধানের বীজ এর উপর ছড়িয়ে দিতে হবে


বীজ রোপন নিয়মাবলী:-


জমিটি প্রথমে গোবর সার দিয়ে উর্বর করে নেওয়ার পর ভালো করে হালবৈয়ে নিতে হবে। মাথায় রাখতে হবে যে ধানটি যত মাসের ধান সেই ধানটিকে ততো সপ্তাহের মধ্যে ফেলতে হবে। ধান পোঁতার সময় একটি থেকে আরেকটি গাছের দূরত্ব 10 ইঞ্চি থেকে 12 ইঞ্চি হয়, মোটামুটি ভাবে এক ফুট এর ফলে আপনাদের নিরেণ করার সময় সুবিধা হবে গাছের ঝাড় ভালো হবে।

পরিচর্যা:-


শ্রী পদ্ধতিতে পরিচর্যার নিয়ম হলো যে ধানটি যত দিনের তার অর্ধেক বয়স পর্যন্ত পরিচর্যা করতে হয়, যেটি হয়তো একশ কুড়ি দিনের ধান সেটাকে সাতদিন পর্যন্ত পরিচর্যা দিতে হবে, 21 দিন পর একবার জমিতে কেঁচো সার প্রয়োগ করতে হবে, এছাড়াও কাঁচা গোবর 10 কেজি, গোমূত্র 10 লিটার, 1 কেজি গুড়, 1 কেজি বেসন, 1 কেজি অসত্য গাছের  গোড়ার মাটি দিয়ে একটি চৌবাচ্চা গুলতে হবে, মিশ্রনটিকে দু-তিনদিন অন্তর ঘেঁটে দিতে হবে, এমন ভাবে 15 থেকে কুড়ি দিন করার পর যখন সবুজ কালার চলে আসবে তখন ওই কুড়ি লিটার মিশন 100 থেকে দেড়শ লিটার জলে মিশিয়ে জমির মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে। এই মিশ্রণটি 21 দিনের মাথায় একবার ও ফল আসার আগে একবার প্রয়োগ করতে পারি।

কিট নাশক হিসাবে ব্যবহারযোগ্য কিছু টোটকা:-

নিমপাতা ভেজা জল ডিমের খোলা ব্যবহার করতে পারেন দু নাম্বার সাবান জল তিন নাম্বার শুকনো লঙ্কা কাঁচালঙ্কা ভেজানো জল 4 নাম্বার চা খাওয়ার পর পড়ে থাকা চা পাতার অংশ ভেজা জল পায় নাম্বার লিকুইড সাবান 6 নাম্বার গোলমরিচ জলে মিশিয়ে স্প্রে করতে পারেন।